স্বাধীনতার ফসল বাংলাদেশের মানুষের ঘরে উঠেনি মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, একটি গোষ্ঠী এটা হাইজ্যাক করে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছিল।মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, একাত্তরে একটা স্বাধীনতা এই জাতি এসেছিলো, কিন্তু স্বাধীনতার মর্মবাণী ঢুকরে ঢুকরে কেঁদেছে। স্বাধীনতার ফসল বাংলাদেশের মানুষের ঘরে উঠেনি। একটি গোষ্ঠী এইটা হাইজ্যাক করেছিলো, আরেকটা দেশের (ভারত) হাতে এটা তুলে দিয়েছিলো। এর জ্বলন্ত প্রমাণ ১৬ ডিসেম্বর পাশের দেশের প্রধানমন্ত্রী বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা দিতে গিয়ে ভারতীয় সৈনিক, সেনাপতিদের দিয়েছেন। আর বলেছেন এটা ভারতীয় বিজয় দিবস।
আওয়ামী লীগ সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চর দখলের মত করে দখল করে নিয়েছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কোমলমতি মেয়েদের বিদ্যাপীঠগুলোকেও কলুষিত করেছে। এই কথা বলতে হৃদয় ভেঙে যায়, মাথা নত হয়ে আসে। এজন্য এই কথাগুলো বলতে পারি না। কেমন অত্যাচার আমাদের মেয়েদের ওপর করা হয়েছে।
ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ তো এই দেশেরই মানুষ ছিলো, কেন তাদের এতো ক্ষোভ এই জাতির ওপর। বিশেষ করে ছাত্রসমাজের ওপর? কারণ সব দেশে, সব সমাজে যুবক এবং ছাত্ররা থাকে অন্যায়, দুঃসাশন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে। এরা কখনো দুঃসাশন ও দুর্নীতিকে মেনে নেয় না। এজন্য ছাত্র সমাজ দফায় দফায় আন্দোলন করেছে। ২০১৮ সালেও এরা আন্দোলন করেছে, সর্বশেষ ২৪ সালে এসেও তারা আন্দোলন করেছে। দফায় দফায় ধোকা দিয়েছে আবার শক্তিও প্রয়োগ করেছে। শক্তি প্রয়োগ করে অনেককে হত্যাও করেছে।
ইসলামী ছাত্র শিবিরসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, আরেকটা যুদ্ধ তোমাদের করতে হবে। সে যুদ্ধটা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সবার আগে মেরামত করা। শিক্ষা যেহেতু জাতির মেরুদণ্ড এই জায়াগায় তোমাদের শপথ নিতে হবে আর কোন চাপাতি সংগঠনকে ওখানে ঢুকতে দিবে না। কোন গাঁজা খোরকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। গণরুম যারা করে তাদেরও ঢুকতে দেওয়া হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুধু শিক্ষার চর্চা থাকবে। যদি তাই থাকে আগামীর বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তোমরা সেভাবে গড়ে তুলতে পারো তাহলে ২৪ এর এই ত্যাগ শতভাগ সফল হবে ইনশাআল্লাহ। আর যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানপকে গড়ে তোলা না যায় এই জাতি বার বার পথ হারাবে। সেজন্য পথ হারা জাতিকে পথে টেনে তুলা তোমাদের দায়িত্ব। এই যুদ্ধে আমরা তোমাদের সাথে আছি। যেভাবে ৩৬ জুলাই পর্যন্ত তোমাদের সঙ্গে ছিলাম, আগামীতেও তোমাদের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করছি।
ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মহাসচিব জাহিদুল ইসলাম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী মহাসচিব রফিকুল ইসলাম খান, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আকতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সহ সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
খুলনা গেজেট/এএজে